Saturday, September 3, 2011

Why a non-Muslim should know the Koran?


The Qur'an is undeniably a book of great importance even to the non-Muslim, perhaps more today than ever, if that is possible. One aspect of Islam that is unexpected and yet appealing to the post-Christian secular mind is the harmonious interplay of faith and reason. Islam does not demand unreasoned belief. Rather, it invites intelligent faith, growing from observation, reflection, and contemplation, beginning with nature and what is all around us. Accordingly, antagonism between religion and science such as that familiar to Westerners is foreign to Islam.

This connection between faith and reason enabled Islamic civilization to absorb and vivify useful knowledge, including that of ancient peoples, whereby it eventually nursed Europe out of the Dark Ages, laying the foundation for the Renaissance. When Europe got on its cultural feet and expelled Islam, however, the European mind was rent by the inability of the Christian church to tolerate the indivisibility of the sacred and the secular that characterized Islam and had enabled Islamic civilization to develop natural science and abstract art as well as philosophy and social science. The result was a painful, ill-fated divorce between science and religion in Europe, one whose consequences have adversely affected the entire world.

In the post-Christian West, where thinking people, including scientists themselves once more, are seeking solutions to the difficulties created by the Christian divorce between religion and science, the Qur'an offers a way to explore an attitude that fully embraces the quest for knowledge and understanding that is the essence of science, while at the same time, and indeed for the same reasons, fully embraces the awe, humility, reverence, and conscience without which "humankind does indeed go too far in considering itself to be self-sufficient" (Qur'an 96:6-7).

Even for the secular Westerner, apart from any question of religious belief or faith, there are immediate benefits to be found in reading the Qur'an. First, in view of the sacredness and vital importance of the Qur'an to approximately one-fifth of all humanity, a thinking citizen of the world can hardly develop a rational and mature social consciousness without considering the message of the Qur'an and its meaning for the Muslim community.
With the fall of communism, it has become particularly clear that global peace, order, and self-determination of peoples cannot be achieved without intelligent respect for Islam and the inalienable right of Muslims to live their religion. The second immediate benefit in reading the Qur'an, therefore, is that it is a necessary step toward the understanding and tolerance without which world peace is in fact inconceivable.

For non-Muslims, one special advantage in reading the Qur'an is that it provides an authentic point of reference from which to examine the biased stereotypes of Islam to which Westerners are habitually exposed. Primary information is essential to distinguish between opinion and fact in a reasonable manner. This exercise may also enable the thinking individual to understand the inherently defective nature of prejudice itself, and thus be the more generally receptive to all information and knowledge of possible use to humankind.


Excerpted from "The Essential Koran" by Thomas Cleary. Thomas Cleary has translated various religious texts, including The Essential Tao, The Secret of the Golden Flower and the bestselling The Art of War.

Thursday, September 1, 2011

অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা (4)

চতুর্থ দফা : যাকাত ব্যবস্থার প্রবর্তন 

 

যাকাত ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি। আল-কুরআনে বারং নামায কায়েমের পরই যাকাত আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশেই যাকাত আদায়ের ব্যাপারে রাসূলে করীম (সা) সাহাবীগণকে উদ্বুদ্ধ করেন এবং এজন্যে একটা প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলেন। কেন যাকাতের এই গুরুত্ব? ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার সম্পদ বন্টন তথা সামাজিক সাম্য অর্জনের অন্যতম মৌলিক প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা হিসেবেই যাকাত গণ্য হয়ে থাকে। সমাজে আয় ও সম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে বিরাজমান ব্যাপক পার্থক্য হ্রাসের জন্যে যাকাত একটি অত্যন্ত উপযোগী হাতিয়ার। যাকাতের সঙ্গে প্রচলিত অন্যান্য সব ধরনের করের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। কারণ, ইসলামের এই মৌলিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একাধারে নৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক মূল্যবোধ অন্তর্নিহিত রয়েছে। কিন্তু সাধারণ করের ক্ষেত্রে কোন নৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক তাগিদ নেই।
যাকাত ও প্রচলিত করের মধ্যে অন্তত : চারটি সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। যথা : প্রথমত : কর বাধ্যতামূলকভাবে সরকারকে প্রদত্ত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ যার জন্যে করদাতা কোন প্রত্যক্ষ উপকার প্রত্যাশা করতে পারে না। সরকারও করের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দরিদ্র ও অভাবী জনসাধারণের মধ্যে ব্যয়ের জন্যে বাধ্য থাকেন না। পক্ষান্তরে যাকাত হিসেবে আদায়কৃত অর্থ অব্যশই আল করআনে নির্দেশিত লোকদের মধ্যেই মাত্র বন্টন করতে বা তাদের জন্যেই বাবহৃত হবে।
দ্বিতীয়ত : যাকাতের অর্থ রাষ্ট্রীয় সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ব্যয় করা যাবে না। কিন্তু করের অর্থ যেকোন কাজে ব্যয়ের ক্ষমতা ও স্বাধীনতা সরকারের রয়েছে।
তৃতীয়ত : যাকাত শুধুমাত্র বিত্তশালী মুসলিমদের জন্যেই বাধ্যতামূল। কিন্তু কর বিশেষত : পরোক্ষ কর, সর্বসাধরণের উপর আরোপিত হয়ে থাকে। অধিকন্তু প্রত্যক্ষ্য করেরও বিরাট অংশ জনসাধরণের উপর কৌশলে চাপিয়ে দেওয়া হয়।
চতুর্থত : যাকাতের হার পূর্ব নির্ধারিত এবং স্থির। কিন্তু করের হার স্থির নয়। যে কোন সময়ে সরকারের ইচ্ছানুযায়ী করের হার ও করযোগ্য বস্তু বা সামগ্রীর পরিবর্তন হয়ে থাকে। সুতরাং যাকাতকে কোনক্রমেই প্রচলিত অর্থে সাধারণ কর হিসেবে গণ্য করা যায় না বা তার সঙ্গে তুলনীয় ও হতে পারে না।
ইসলামী শরীয়ত অনুসারে যে সমস্ত সামগ্রীর উপর যাকাত ধার্য হয়েছে সেগুলি হলো-
১। ব্যাংকে/হাতে সঞ্চিত/জমাকৃত অর্থ
২। সোনা, রূপা, এবং সোনা-রূপা দ্বারা তৈরী অলংকার;
৩। ব্যবসায়ের পণ্য সামগ্রী;
৪। জমির ফসল;
৫। খনিজ উৎপাদন; এবং
৬। সব ধরনের গবাদি পশ।

উপরোক্ত দ্রব্য সামগ্রীর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ যখন কোন মুসলমান অর্জন করে তখন তাকে যাকাত দিতে হবে। এই পরিমাণকে নিসাব বলে। নিসাবের সীমা বা পরিমাণ দ্রব্য হতে দ্রব্যে ভিন্নতর। একইভাবে যাকাতের হারও দ্রব্য হতে দ্রব্যে ভিন্নতর। যাকাতের সর্বনিন্ম হার শতকরা ২০৫%।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাকাত কাদের প্রাপ্য অর্থাৎ কাদের মধ্যে যাকাতের অর্থ বন্টন করে দিতে হবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন-
দান-খয়রা তো পাওনা হলো দরিদ্র ও অভাবীগণের, যে সকল কর্মচারীর উপর আদায়ের ভার আছে তাদের, যাদের মন (সত্যের প্রতি) সম্প্রতি অনুরাগী হয়েছে গোলামদের মুক্তির জন্যে ঋণগ্রস্তদের জন্যে আল্লাহর পথে (মুজাহিদদের) এবং মুসাফিরদের জন্যে। এটি আল্লাহর তরফ হতে ফরয এবং আল্লাহ সব জানেন ও বুঝেন।
সূরা আত তাওবা : ৬০ আয়াত

উপরের আয়াত হতে আটটি উদ্দেশ্যে যাকাতের অর্থ ব্যবহারের জন্যে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ পাওয়া যায়। সেগুলি হচ্ছে :

১। দরিদ্র জনসাধালণ
২। অভাবী ব্যক্তি;
৩। যে সকল কর্মচারী যাকাত আদায়ে নিযুক্ত রয়েছে;
৪। নও-মুসলিম;
৫। ক্রীতদাস বা গোলাম মুক্তি;
৬। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি;
৭। আল্লাহর পথে মুজাহিদ ; এবং
৮। মুসাফির।

এই আটটি খাতের মধ্যে ছয়টিই দারিদ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অন্য দুটি খাতও (৩ ও ৭) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা যাকাত আদায় ও ব্যবস্থাপনা একটি কঠিন ও শ্রমসাপেক্ষ কাজ। এ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের এটাই সার্বক্ষণিক দায়িত্ব।
সুতরাং, তাদের বেতন এই উৎস হতেই দেওয়া বাঞ্চনীয়। তাছাড়া যেসব ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রামে লিপ্ত তারাও অন্য কোনভাবে জীবিকা অর্জনের সুযোগ হতে বঞ্চিত। সুতরাং, উপরে বর্ণিত আটটি খাতেই যদি যাকাতের অর্থ ব্যয় হয় তাহলে দরিদ্রতা দূর হবে। একই সঙ্গে অন্যান্য বহু অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার নিরসন হবে।
রাসূলে কারীম (সা) নিশ্চিতভাবেই জানতেন, ইসলামী রাষ্ট্রে মৌলিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাকাতের প্রতিষ্ঠা হলে বহুবিধ কল্যাণ সাধিত হবে। তাই তিনি যাকাত যথাযথ আদায় ও তার সুষ্ঠ বন্টনের জন্যে কঠোর তাগিদ দিয়ে গেছেন।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় সুষ্ঠুভাবে যাকাত আদায়ের জন্যে রাসূলে কারীম (সা) নবম ও দশম হিজরীতে আরব ভূখন্ডের বারোটি এলাকায় বারোজন প্রখ্যাত সাহাবীকে দায়িত্ব প্রদান করেন। নীচে এর বিবরণ দেয়া হলো :

নাম্বার এলাকা.... সাহাবীগণের নাম
১। মদীনা মুনাওয়ারা.... বিলাল বিন রাবাহ
২। মক্কা মুয়াযযামা.... হুবায়রাহ বিন শিবল
৩। জেদ্দা.... হারিস বিন নওফল
৪। তায়েফ.... উসমান বিন আবী আল-আস
৫। সানা.... মুহাজির বিন আবি উমাইয়াহ
৬। নাজরান.... আলী বিন আবী তালিব
৭। ইয়ামান.... মুআয বিন জাবাল
৮। বাহরাইন.... আবান বিন সাঈদ
৯। হুনায়ন ....আমর বিন আল-আস
১০। খায়বার.... সাওয়াদ বিন আযীয়াহ
১১। ওয়াদী উল কুরা.... আমর বিন সাঈদ
১২। হাযরামাউত.... যিয়াদ বিন লাবীদ

অনুরূপভাবে চৌদ্দটি প্রধান গোত্র হতে যাকাত আদায়ের দায়িত্ব তিনি বারোজন খ্যাতনামা সাহাবীর উপর অর্পণ করেছিলেন। যথা

গোত্র.... সাহাবীগণের নাম
১। বনু মুসতালিক.... ওয়ালীদ বিন উকরাহ
২। বনু গাতফান..... নওফাল বিন মুয়াবিয়াহ
৩। বনু বনু হাওয়াযিন..... ইকরামাহ বিন আবু জাহেল
৪। বনু গিফার ও বনু আসলাম.... বুরাইদাহ বিন হুসায়ব
৫। বনু হানযালাহ .....মালিক বিন নোওয়াইরাহ
৬। বনু সুলাইম ও বনু মুযাইনাহ ....আব্বাস বিন বশীর আশহালী
৭। বনু তামীম.... উয়ায়নাহ বিন হিসন
৮। বনু জুহায়নাহ.... রাফি বিন মাকীস
৯। বনু ক্বিলাব.... যাহহাক বিন সুফিয়ান
১০। বনু সাকীফ.... কিলাব বিন উমাইয়াহ
১১। বনু আযদ ....হুযায়ফা বিন আল ইমরান
১২। বনু তাঈ ও বনু আসাদ.... আদী বিন হাতীম

যাকাত যথাযথ বিলি বন্টনের জন্যেও নবীজীর (সা) উদ্যোগেই বলিষ্ঠ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরী হয়েছিল যা আজকে যেকোন উন্নত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সঙ্গে তুলনীয়। এ থেকেই বোঝা যায় যাকাত বায়তুলমালের কত বড় গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। এই প্রতিষ্ঠানে নীচে বর্ণিত আট শ্রেনীর কর্মচারী নিয়োজিত ছিল। এর হচ্ছে-

১। সায়ী = গবাদী পশুর যাকাত সংগ্রাহ;
২। ক্বাতিব = করণিক;
৩। ক্বাসাম = বন্টনকারী;
৪। আশির = যাকাত প্রদানকারী ও যাকাত প্রপকদের মধ্যে সম্বন্ধ স্থাপনকারী
৫। আরিফ = যাকাত প্রাপকদের অনুসন্ধান কারী
৬। হাসিব = হিসাব রক্ষক
৭। হাফিজ = যাকাতের বস্তু ও অর্থ সংরক্ষক ; এবং
৮। ক্বায়াল = যাকাতের পরিমাণ নির্ণয় ও ওজনকারী

যাকাতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য বহুবিধ। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রধান এবং মূখ্য হচ্ছে কতিপয় ব্যক্তির হাতে সম্পদ কেন্দ্রীভূত হতে না দেওয়া। ইসলাম সামাজিক শ্রেণী বৈষম্যকে শুধু নিন্দাই করে না, বরং তা দূরীভূত করার পদক্ষেপও অবলম্বন করতে বলে। তাই একটি সুখী, সুন্দর এবং উন্নত সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্যে বিত্তশালী মুসলিমদের অবশ্যই তাঁদের সম্পদের একটা অংশ ব্যয় করা উচিৎ। এর ফলে শুধু অসহায় ও দু:স্থ মানবতার কল্যাণ হবে তায় নয়, আয়-বন্টনের বৈষম্যও হ্রাস পাবে।
যাকাত প্রদানের ফলে সম্পদশালী মুসলিমের মন হতে ধন-সম্পদের লালসা দূরীভূত হবে। দরিদ্রদের অভাবা মোচনের জন্যে নিজেদের দায়-দায়িত্ব সম্বন্ধে তারা সচেতন হবে। বিত্তবান মুসলমানদের আল্লাহ সৎপথে তাঁদের সম্পদ ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছেন। বাৎসরিক উদ্বৃত্ত অর্থ হতে নির্দিষ্ট হারে একটা অংশ দরিদ্র এবং দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের মধ্যে তাঁরা বিতরণ করবেন। এর ফলে তারা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জন করেন।
যাকাত মজুতদারী বন্ধু করারও এক প্রধান ও বলিষ্ঠ উপায়। মজুতকৃত সম্পদের উপরই যাকাত হিসেব করা হয়ে থাকে। অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ এবং মজুত সম্পদ যে কোন অর্থনৈতিক কার্যক্রম গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে বিবেচিত হয়ৈ থাকে। অবৈধভাবে অর্থ মজুত করার ফলে নানারকম সামাজিক সমস্যা দেখা। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃংখলা এর প্রকৃষ্ট নজীর। অল্প কিছু লোকের হাতে বিপুল অবৈধ ও কালো টাকা জমেছিল। সরকারের এমন কোন কৌশল বা পদ্ধতি ছিল না যার দ্বারা এই অবৈধ অর্থের সঠিক পরিমাণ জানা সম্ভব ছিল। ফলে এসবের উপর কোন প্রকার কর বসানো যায়নি। পরিণামে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফ্রীতি ও সামাজিক শ্রেণী বৈষম্যের।
কোন পদ্ধতিই সার্থকভাবে উপরোক্ত সমস্যার মুকাবিলা করতে সক্ষম নয়। একমাত্র ইসলামেই তার সমাধান রয়েছে। কারণ বিত্তবানের জন্যে তাদের মজুতকৃত অর্থ বা সম্পদের একটা অংশ নিছক বিলিয়ে দেবার মতো কোন পার্থিব কারণ নেই। কিন্তু একজন মুসলমানের আল্লাহ ও আখিরাতের ভয় রয়েছে। উপরন্ত ইসলামী রাষ্ট্রে আল-কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে প্রবর্তিত আইনে সরকারের হাতে প্রভূত ক্ষমতাও রয়েছে মজুত সম্পদকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ব্যয়, বিতরণ বা সরকারের কাছে সমর্পণে বাধ্য করতে। এর ফলে বিত্তবানদের সামনে দুটি মাত্র পথ খোলা থাকবে-
১। শিল্প বা ব্যবসায়ে অর্থ বিনিয়োগ করা, অথবা
২। ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী তা ব্যয় করা।
যাকাতের অন্যতম অর্থনৈতিক ও সামাজিক উদ্দেশ্যে হচ্ছে ইসলামী সমাজ হতে দরিদ্রতা দূর করা। দারিদ্র মানবার পয়লা নম্বরের দুশমন। ক্ষেত্রবিশেষে তা কুফরী পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। যে কোন সমাজ ও দেশের এটা সবচেয়ে জটিল ও তীব্র সমস্যা। সমাজে হতাশা ও বঞ্চনার অনুভূতির সৃষ্টি হয়। দারিদ্রতার ফলে। পরিণামে দেখা দেয় সামাজিক সংঘাত। বহু সময়ে রাজনৈতিক অভ্যূত্থান পর্যন্ত ঘটে। অধিকাংশ অপরাধই সচরাচর ঘটে দরিদ্রতার জন্য। এ সমস্যাগুলির প্রতিবিধান করার জন্যে যাকাত ইসলামের অন্যতম মূখ্য হাতিয়ার। যে আট শ্রেণীর লোকের কথঅ পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, যাকাত লাভের ফলে তাদের দিনগুলি আনন্দ ও নিরাপত্তার হতে পারে। যাকাত যথাযথভাবে আদায় ও পরিকল্পিত ভাবে ব্যবহার করা হলে, আজকের দিনেও এর মাধ্যমে দারিদ্র দূর করা সম্ভব।
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পূর্বে বর্ণিত বিভিন্ন ধরনের লোকদের মধ্যে যখন যাকাতের অর্থসামগ্রী বন্টন করে দেওয়া হয় তখন শুধু যে অর্থনৈতিক সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয় তাই নয়, বরং অর্থনৈতিক কার্যক্রমেও গতিবেগ সঞ্চারিত হয়। দরিদ্র ও দুর্গত লোকদের ক্রয়ক্ষমতা থাকে না। বেকারত্ব তাদের নিত্যসঙ্গী। যাকাত প্রাপ্তির ফলে তাদের হাতে অর্থাগম হলে বাজারে কার্যকর চাহিদার সৃষ্টি হয়। এরই ফলে দীর্ঘ মেয়াদে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। তখন অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নতুন প্রেরনার সৃষ্টি হয়, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নির্মাণের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হয় অনুকূল পরিবেশ। ফলশ্রুতিতে প্রচলিত সামাজিক শ্রেণীসমূহের মধ্যে আয়গত পার্থক্যও হ্রাস পেতে থাকে।